খাদ্য পরিকল্পনা (Diet Plan)

খাদ্য পরিকল্পনা (Diet Plan)

খাদ্যপরিকল্পনা শুধুমাত্র আপনি যা খুশি খাচ্ছেন তা নয়; এটি মুলত এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন ব্যাক্তি সঠিক পুষ্টি গুন সম্পন্ন খাবার কখন গ্রহন করবে তার সঠিক পরিকল্পনা। ট্রেন্ডি ডায়েটে ডুব দেওয়ার পরিবর্তে বা জটিল শাসনব্যবস্থা অনুসরণ করার পরিবর্তে, আপনার দেহের চাহিদা এবং পছন্দের চারপাশে আবর্তিত খাবার পরিকল্পনার আরও বাস্তব পদ্ধতি বিবেচনা করুন।



আপনার দেহকে জানুনঃ

আমেরিকান অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তা ও লেখক জিম রণের পরামর্শ অনুযায়ী ,’ নিজের শরীরের যত্ন নাও, কারণ এটিই একমাত্র স্থান-যেখানে তোমাকে বাস করতে হবে।’

আগে নিজের দেহের সঠিক ওজন আর বয়স অনুযায়ী খাদ্যগ্রহন করতে হবে ।

একজন পুষ্টিবিদ রেন্টিনা চাকমার মতে,

উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক রেখে দেহের সুস্থতার জন্য শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। কেবল ওজন কমানো বা বাড়ানোর জন্য নয় বরং বিভিন্ন রোগের ধরন অনুযায়ী পথ্য পরিকল্পনা করতে হবে। আমেরিকার প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ড অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির মোট ওজনের সঙ্গে ০.৮ (গ্রাম) গুণ করে যে মান পাওয়া যাবে, সেটি হবে তার দৈনিক প্রোটিনের চাহিদার মান। ১ গ্রাম প্রোটিন থেকে ৪ কিলো ক্যালরি (শক্তি) পাওয়া যায়। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির ওজন ৫০ কেজি হলে তার প্রোটিনের চাহিদা হবে ৪০ গ্রাম।

প্রতিষ্ঠানটির মতে, ব্যক্তিভেদে প্রয়োজনীয় ক্যালরিতে ৪৫ থেকে ৬৫ শতাংশ শর্করা থাকা উচিত। যেমন- ধরা যাক একজন ব্যক্তির দৈনিক প্রয়োজনীয় ক্যালরি ১৮০০। তিনি যদি ৫৫ শতাংশ শর্করা গ্রহণ করেন, তবে তার দৈনিক শর্করার চাহিদা হবে ২৪৭ গ্রাম। ১ গ্রাম শর্করা থেকে পাওয়া যায় ৪ কিলো ক্যালরি।

অন্যদিকে চাহিদা অনুযায়ী মোট ক্যালরির ২৫ শতাংশ ফ্যাট থেকে গ্রহণ করা ভালো। এক্ষেত্রে ১৮০০ ক্যালরিতে ফ্যাটের চাহিদা হবে ৫০ গ্রাম। ১ গ্রাম ফ্যাটে মিলবে ৯ কিলো ক্যালরি। একইভাবে ভিটামিন, মিনারেলস ও অন্যান্য খাদ্য উপাদানও পরিমিত পরিমাণ থাকা আবশ্যক।

চাহিদা অনুযায়ী দৈনিক এ খাবারের কত শতাংশ কখন গ্রহণ করতে হবে তারও একটি তালিকা থাকা প্রয়োজন।


পুষ্টির ইতিবাচক ভূমিকা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
** ওজনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য।
** জীবনযাপনে সুশৃঙ্খল ধারা বজায় রাখতে।
** রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য।
** মানসিক সুস্থতার জন্য।



ব্যাচ কুকিং এবং ফ্রিজিংঃ 
রান্না করে ব্যাচ বানিয়ে রেফ্রিজারেটরে রাখা যায় এবং যখন প্রয়োজন ফিজ থেকে বের করে গ্রহন করা যাবে । এই কৌশলটিতে, আপনি ঐতিহ্যগত খাবার পরিকল্পনার ধাপগুলি অনুসরণ করবেন (খাবার নির্বাচন করা, একটি তালিকা তৈরি করা এবং কেনাকাটা করা)।

 

সুষম খাওয়া:

নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য গ্রুপের উপর নির্ভর করার পরিবর্তে, একটি সুষম খাদ্য প্লেটের জন্য লক্ষ্য রাখুন। বিভিন্ন রঙিন শাকসবজি, চর্বিহীন প্রোটিন, পুরো শস্য এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি যুক্ত করুন। এই বৈচিত্র্যময় নিশ্চিত করে যে আপনি বিস্তৃত পরিসরে পুষ্টি পাচ্ছেন।

 

পরিমান নিয়ন্ত্রণ:
খাদ্যের পরিমানের উপর নজর রাখুন। মনযোগ সহকারে খাওয়া এবং যখন আপনি পূর্ণ হন তখন বন্ধ করা ,অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করলে আপনার শরীরকে তার শক্তির মাত্রা স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়।


পানি পানঃ
খাদ্যের পরিকল্পনায় জল প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়। হাইড্রেটেড থাকা সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে এবং এমনকি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। একটি জলের বোতল সারা দিন হাতে রাখুন। ইউ.এস. ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিসিন নির্ধারণ করেছে যে পর্যাপ্ত দৈনিক পানি গ্রহণ: পুরুষদের জন্য প্রতিদিন প্রায় 15.5 কাপ (3.7 লিটার) পানি । মহিলাদের জন্য দিনে প্রায় 11.5 কাপ (2.7 লিটার) পানি ।

পরিশেষে, দীর্ঘমেয়াদে খাবার পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ধারাবাহিকতা। আপনি আপনার নিয়মিত সময়সূচীতে যত বেশি খাবারের পরিকল্পনা তৈরি করতে পারবেন, ততই এটি একটি অভ্যাসে পরিণত হবে ।

Back to blog

Leave a comment

Please note, comments need to be approved before they are published.