উদ্ভিজ্জ আমিষ নাকি প্রাণীজ আমিষ ?

উদ্ভিজ্জ আমিষ নাকি প্রাণীজ আমিষ ?

আমিষ কী এবং এর গুরুত্ব। আমিষ মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। এটি দেহকলার গাঠনিক উপাদানগুলোর একটি এবং জ্বালানির উৎস হিসেবেও কাজ করতে পারে। জ্বালানি হিসেবে আমিষ শর্করার সমপরিমাণ শক্তি ঘনত্ব প্রদান করে: প্রতি গ্রামে ৪ কিলোক্যালরি এবং এর বিপরীতে স্নেহপদার্থ বা চর্বি প্রতি গ্রামে ৯ কিলোক্যালরি বা ৩৭ কিলোজুল শক্তি প্রদান করে। পুষ্টিগত দৃষ্টিকোণ থেকে আমিষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ও সংজ্ঞাসূচক বৈশিষ্ট্য হল এর ভেতরে অ্যামিনো অ্যাসিডসমূহের সংযুক্তি।


আমিষ প্রধানত দুই প্রকার।


আমিষ কয় প্রকার তা নির্ধারণ করা হয় মুলত তার উৎপত্তি থেকে সেই হিসাবে আমিষ দুই প্রকারঃ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ ।

প্রাণীজ আমিষ , আমিষ স্তরের সর্বনিম্ন স্তর নয়। বরং আমিষের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাওয়া যায় প্রাণী থেকে। এখানে কিছু আমিষের উপাদান ও তার উপকারীতা লেখা হলঃ


উদ্ভিজ্জ আমিষ:
 উদ্ভিদ জগৎ থেকে প্রাপ্ত আমিষ উদ্ভিজ্জ আমিষ বলে। যেমন: ডাল, বাদাম, সয়াবিন, শিমের বিচি ইত্যাদি। উদ্ভিজ্জ আমিষকে দ্বিতীয় শ্রেণির আমিষ বলে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা, নিরামিষ ভোজি বা সবজি বেশী গ্রহণ করে, তাদের বিভিন্ন রোগ ( টাইপ টু ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন ) ইত্যাদি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।


সোয়া আমিষঃ সোয়া আমিষ পাওয়া যায় সয়াবিন থেকে যা মুলত উদ্ভিজ্জ আমিষের অংশ। এগুলোতে ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক এবং বি ভিটামিন আছে । আর এতে চর্বি এবং কোলেস্টেরল থাকে না যার জন্য প্রাণিজ আমিষ পরিবর্তে উদ্ভিদ আমিষ গ্রহণ করলে যেকোন রকম হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা যায়।


প্রাণীজ আমিষঃ প্রাণী থেকে যে আমিষ আমরা পাই তাই প্রাণীজ আমিষ। যেমনঃ মাংস, দুধ, মাখন ইত্যাদি। মানবদেহে ২০ রকমের অ্যামিনো এসিড প্রয়োজন । তার মধ্যে ১১ টি মানবদেহে উৎপাদন করে , এর বাইরে আরো ৯টী গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো এসিড খাদ্য থেকে আসে। দুধ, ডিম, মাংস এগুলা থেকে প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো এসিড থাকে।

যদিও অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, চর্বি যুক্ত মাংসে হার্টের ক্ষতি হয় এমনকি হৃদরোগ আর অকাল মৃত্যু হতে পারে ।


কিন্তু তার জন্য প্রাণীজ আমিষকে আমিষ সর্বনিম্ন স্তর বলা যায় না । আমিষে প্রচুর অ্যামিনো এসিড থাকে যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পরিমাণ মতো প্রাণীজ আমিষ গ্রহণ করলে তা থেকে হওয়া ক্ষতি কমানো যায়।

এর বাইরেও আরও কিছু আমিষ আছে যা পরোক্ষভাবে প্রাণীজ আমিষ যেমনঃ ছানা


পরিশেষে এটা বলা যায় প্রাণিজ প্রোটিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের তুলনা করলে, নিশ্চিত ভাবে কোনও একটিকে এগিয়ে রাখা অসুবিধাজনক। কারণ, প্রাণিজ প্রোটিন সহজলভ্য হলেও প্রাণিজ প্রোটিন বা মাছ-মাংস অতিরিক্ত খেতে গেলে দেহে কিছু কিছু ক্ষতিকর প্রভাবও পড়তে পারে। অন্য দিকে শাক সব্জি থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন কিছুটা দুর্লভ হলেও প্রোটিনের সঙ্গে সঙ্গে শাক সব্জি থেকে অন্যন্য নানা ধরনের পুষ্টিগত উপাদান মেলে। আর এই প্রোটিনের মধ্যে ৫০-৫০ ভাগ রাখতে হবে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে আর ৫০ শতাংশ গ্রহণ করতে হবে প্রাণিজ প্রোটিন সোর্স থেকে। তাহলেই প্রোটিনের ঘাটতিও মিটবে, আর সুস্থ থাকার পথও হবে প্রশস্থ।
Back to blog

Leave a comment

Please note, comments need to be approved before they are published.